ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি দেশের প্রথম শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান এবং বর্তমানে দেশের বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংকগুলোর একটি। ব্যাংকটি ১২ মিলিয়নেরও বেশি গ্রাহককে সেবা প্রদান করে এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার বিরুদ্ধে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া যায়। এস আলম গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এবং ৯১ হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ।
২০২৫ সালের ২১ মে, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক মুনিরুল মওলাকে অপসারণের অনুমোদন দেয়। এই সিদ্ধান্ত ২০ জুন থেকে কার্যকর হবে। এর আগে, ৬ এপ্রিল তাকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল ।
মুনিরুল মওলার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও জালিয়াতির নথি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হয়েছে। দুদক নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া, ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে ।
বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪২.২২ শতাংশ। এই বিপুল পরিমাণ খেলাপির কারণে ব্যাংকটি ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকার প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে। এই ঘাটতি পূরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ২০ বছরের সময় প্রার্থনা করেছে ।
এই ঘটনা দেশের ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর উচিত ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।